স্থান, আসানসোল দেওয়ানি মোড়। রয়েছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি। গলায় ঝুলছে আদ্যিকালের ফুলের মালা। শুধু বিদ্যাসাগরই নন, একই হাল লেনিন, রবীন্দ্রনাথ থেকে নজরুল ইসলাম, সব মনীষীরই। আসানসোল মহকুমা জুড়ে মনীষীদের মূর্তিগুলির ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ হয় না, অভিযোগ শহরবাসী থেকে শিল্পী, সকলেরই।
বিদ্যাসাগরের মূর্তিটি বসিয়েছিল আসানসোল পুরসভা। অভিযোগ, জন্মদিন ছাড়া সেই মূর্তি ঝাড়পোঁছ হয় না। একশো মিটার দূরে গাঁধী মূর্তিটিরও একই হাল। ২ অক্টোবরের আগে অবশ্য মূর্তি সাফ করা হয়। হাটনরোড মোড়ে প্রায় তিন দশক আগে লেনিনের মূর্তি বসায় পুরসভা। বর্তমানে লেনিন-মূর্তি অবশ্য ঢাকা পড়েছে গাছপালার আড়ালে। এমনকী, আইল্যান্ডটির গায়ে দাঁড় করানো সাইকেলও। সামান্য দূরত্বে পুরসভা ভবন। সেখানে মুন্সি প্রেমচাঁদের মূর্তির চারপাশ বেশির ভাগ সময়ই ঢেকে থাকে বিজ্ঞাপনের ব্যানারে। আসানসোল দক্ষিণ থানা চত্বরে ক্ষুদিরাম, ট্র্যাফিক জিমনেসিয়ামের সামনে জওহরলাল নেহরু, চুরুলিয়া যাওয়ার রাস্তার সংযোগস্থলে কাজী নজরুল ইসলাম ও টেগোর রোডে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিগুলিতেও অযত্নের ছাপ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা মূর্তিগুলির রক্ষণাবেক্ষণে কোনও পদক্ষেপ করে না। বারি ময়দান তথা টাউন পুজো মন্দিরের সামনে স্বামী বিবেকানন্দ, রানিগঞ্জের রামাবাগানে মাইকেল মধুসূদন দত্তের মূর্তিগুলিরও একই হাল।
তবে শুধু পুরসভাই নয়, মূর্তি রক্ষণাবেক্ষণে উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে ইস্কোর বিরুদ্ধে। আসানসোল-কল্যাণপুরের শেষ প্রান্তে বিধানচন্দ্র রায়, বার্নপুর স্কব গেট ও ত্রিবেণী মোড়ে মহাত্মা গাঁধীর মূর্তি বসায় কারখানা। কিন্তু সেগুলিরও পরিচর্যা করা হয় না বলে অভিযোগ।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ আসানসোলের শিল্পী সুশান্ত রায়। তাঁর দাবি, ‘‘পরিচর্যার অভাবে বেশির ভাগ মূর্তিই বিবর্ণ।’’ চিত্রশিল্পী সত্যেন গঙ্গোপাধ্যায়, দেবব্রত ঘোষরাও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। শহরের শিক্ষক মহলের সঙ্গে যুক্ত একাধিক জনের আক্ষেপ, এমনটা চলতে থাকলে পড়ুয়ারাও আগ্রহ হারাতে পারে মনীষীদের জীবন সম্পর্কে।
Source-Anandabazar patrica
EmoticonEmoticon